Latest post

5/recent/ticker-posts

Google Adsense

বীভৎস রস(ছোট গল্প)



কে সফল?
নতুন স্কুলে কয়েকদিনের মধ্যে ভয়ঙ্কর রেগিং এর শিকার হল মেয়েটি। গ্রাম থেকে মাধ্যমিকে পাস করে আসা নাচে, গানে ও মেধায় তুখোড় মেয়েটি সিনিয়রদের কাছে বিবেচিত হয়েছিল শিক্ষা ও বুদ্ধি দিয়ে নয়, বরং সে কতটা শহুরে জীবনে মানানসই এবং আধুনিক তা দিয়ে। 'সভ্য', 'শিক্ষিত' পরিবারের ইংরেজি বলতে পারা সিনিয়র আপু ও ভাইরা তাঁকে ঝাঁ চকচকে বিশাল স্কুল বাড়ির পিছনে পরিত্যক্ত অন্ধকার ঘরটিকে সাক্ষী রেখে, রচনা করে আত্মা শিহরণকারী নাটকের। যেখানে তারা তাকে সাংঘাতিক বুলি করে, মেতে ওঠে বিকৃত মজায়, কিল, চড়, ঘুসি মেরে নিজেদের ভদ্রতার মুখোশ টেনে খুলে ফেলে উলঙ্গ করে দেয় অন্তরালে লুকিয়ে থাকা নিকষ কালো বিভীষিকাময় অন্ধকারকে।

হাসপাতালে কষ্ট ও যন্ত্রণার সাথে দীর্ঘ লড়াই শেষে বাড়ি ফিরে এলেও রিমা এবার প্রবেশ করে  অবসাদের অন্ধকার ঘুপচি ঘরে। অন্ধকারের অতলে তলিয়ে যেতে থাকে সে, আত্মহত্যা করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু পরিবারের ও আপনজনদের ভালোবাসা ও সাপোর্টে সেই সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসে সে। যে মেয়ে সব সময় হাসিখুশি থাকত, মাথায় থাকতো গান আর মনে থাকতো আনন্দ, সেই মেয়ের মাথায় দানা বাঁধে দুশ্চিন্তা, ভয়, দুঃস্বপ্ন যা ভাষায় প্রকাশিত হতো তার ডায়েরিতে। তাঁর মনে হতে লাগলো, একটি ট্রেনে বসে অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে যে যাত্রা কখনো শেষ হবে না।

কিন্তু আলোর দেখা রিমা একসময় ঠিকই পেল। কিছুটা নিজের মানসিক জোরে এবং পরিবারের সাপোর্টে এক সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হলো সে এবং ফিরে এলো জীবনের মূল স্রোতে।

আজ রিমা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। সে তার অন্ধকার জীবন থেকে বেরিয়ে এসে আলোর দেখা পেয়েছিল। কিন্তু সেদিন যারা ওর ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছিল তারা কি মানসিকভাবে কখনো সুখী হতে পারবে? রিমা ওদের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন নেয় নি কিন্তু প্রকৃতি ওদের শাস্তি ঠিকই দিবে। কিন্তু সবার পক্ষে কি সম্ভব হয় অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসা......???? তাই আসুন না সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের সন্তানদেরকে রেগিং এর কুফল সম্পর্কে জ্ঞান দেই এবং তাদেরকে এই জঘন্য কাজটি করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি।

Post a Comment

2 Comments

  1. অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটি

    ReplyDelete
  2. আমরা নিষ্ঠুর এক সমাজে পরিণত হচ্ছি

    ReplyDelete